প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলি আমাদের সবাইকে কম বেশি আর্কষন করে। আর তা
কেবল ঐ ঐতিহাসিক স্থানের সৌন্দর্য বা স্থাপনা গুলোর উপরে নয়। তাদের নির্মানের
কৌশল গুলোর
জন্য ও। আবার হতে হয় প্রাচীন কালের সেই ইন্জিনিয়ার দের দক্ষতা কল্পনা করে।
সীমিত জনশক্তি এবং প্রযুক্তি দিয়ে ওড়ে তুলেছিল এসব স্থাপনা। আর সেই ঐতিহাসিক
স্থান গুলো থেকেই বাছাইকৃত সেরা ৫ টি স্থানের নাম এবং তালিকা থাকছে আজকের এই
পোষ্টে।
১। পেত্রা নগরী
পেত্রা নগরী বিশ্বের সেরা ৫ টি ঐতিহাসিক স্থানের নামের তালিকায় ১ম স্থানে
রয়েছে। ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্তিক দিক থেকে এই পেত্রা নগরী বিশ্বের সবচেয়ে
আকর্ষণীয়। এটি বিখ্যাত পাথরের স্থাপত্য ও সুন্দর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার
জন্য। পেত্রা মানেই পাথরের নগরী। আর এই পেত্রা নগরী জর্ডান এর ওয়াদি মূসা
বারমূসা উপত্যকায়। সুইস পর্যটক লুইক বার্ক হার্ডিট ১৮১২ সালে এটা প্রথম আবিষ্কার
করেন যদিও এর গোড়া পত্তন হয় খিষ্ট জম্মের ৬০০ বছর পূর্বে রাজা এরিটাসের শাসন
আমলে।
পেত্রা ছিল নাবাতিয়ানদের রাজধানী। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতকে বাণিজ্যিক ভাবে এটা
দখল করে নেয় সামিরা। তখন থেকেই এটার গুরুত্ব কমতে থাকে। সপ্তমশতকে মুসলমানরা ও
দ্বাদশ শতকে ক্রুসেডাররা পেত্রা দখল করে নেয়। মূলত এর পর থেকেই পেত্রা ধংস হতে
শুরু করে। এছাড়াও ৩৬৩ সালে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে এই শহরটির প্রায় ৫০ ভাগই ধংস
হয়ে যায়। এখনো এই শহর দর্শনার্থীদের কাছে আর্কষনের কেন্দ্র বিন্দু। এটা কে
পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের একটি ধরা হয়। তবে কী কারণে এই শহর কে পরিত্যক্ত করা
হয়েছিল তা আজও সবার কাছে অজানা রয়েছে।
২. মাচু পিচু
বিশ্বের সেরা ৫টি ঐতিহাসিক স্থানের মধ্যে ২য় স্থানে রয়েছে মাচু পিচু। মাচু পিচু
পৃথিবীর অন্য এক বিভ্রান্তিকর, সুন্দর এবং ঐতিহাসিক একটি স্থান। এটা পেরুর দক্ষিণ
অঞ্চলে অবস্থিত। প্রাচীন ধংস প্রাপ্ত এই নগরটি আন্দিজ নামক পাহাড়ের চূড়ায়
অবস্থিত। মাচু পিচু এর অর্থ হলো বুড়ো পাহাড় বা প্রচীন পাহাড়। ১৯০০ সালে নতুন
করে মাচু পিচু আবিষ্কার করেন প্রত্নত্তাতিক হিরাম বিংহাম যদিও এর নির্মাণ কাল
চতুর্দশ শতকে। মাচু পিচু ছিল প্রাচীন ইনকা সভ্যতার মূল কেন্দ্রবিন্দু স্প্যানিশরা
এটিকে আক্রমণ করার পর পরিত্যক্ত হয়ে যায় এটা। পূর্বে মাচু পিচু কে পবিত্র স্থান
হিসেবে মানা হতো। ১৯৮৩ সালে মাচু পিচু ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এর
অন্তর্ভুক্ত হয়। পরে ২০০৭ সালের পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের একটি হয়।
৩. গিজার পিরামিড
বিশ্বের সেরা ঐতিহাসিক স্থানের ৩য় স্থানে রয়েছে গিজার পিরামিড। এই পিরামিড
প্রায় তিন হাজার বছর পুরোনো। এটি একটি প্রাচীন বিম্ময় এবং বর্তমান বিশ্বের
ট্যুরিস্ট আকর্ষণ। এটা পরিষ্কার যে গিজার পিরামিডে ফারাওদের সমাধিত করা হয়েছে।
তাদের ধারণা ছিল মৃত্যুর পর তাদের সেখানে কষ্ট হবে তাই তারা সেই কবরের মধ্যে
অন্যতম সুসজ্জিত ঘর, দামী গয়না, খাবার দাবার রেখেছিল। এখানে তিনটি পিরামিড
রয়েছে। তবে এটা পরিষ্কার না যে প্রাচীন মিশরীয়রা এই পিরামিড কীভাবে তৈরি করেছে।
পিরামিড গুলোতে রয়েছে অসংখ্য কুঠুরি এবং সেই কুঠুরি এতোটাই ছোট যে সেগুলো কীভাবে
তৈরি করা হয়েছে তা আজও বিম্ময়কর।
৪. স্টোনহেঞ্জ
বিশ্বের সেরা ঐতিহাসিক স্থানের ৪র্থ তালিকায় রয়েছে স্টোনহেঞ্জ । স্টোনহেঞ্জ
বিশ্বের বিখ্যাত এবং ঐতিহাসিক একটি স্থান। স্টোনহেঞ্জ ইংল্যান্ড এর উইল্টশায়ার
এর কাছাকাছি অবস্থিত। যেখানে অনেক বিরাট পাথর দ্বার করিয়ে রাখা হয়েছে। এবং
কতগুলো ঐ দ্বারকরানো পাথরের উপরে রাখা হয়েছে। পাথর গুলো আনা হয়েছিল ওয়েলস থেকে
প্রায় ৩০০০ বছর আগে। বিশেষজ্ঞরা এখনো নিশ্চিত নয় যে কীভাবে এই পাথরগুলো ওয়েলস
থেকে আনা হয়েছে। কেইন বা স্টোনহেঞ্জ তৈরি করা হয়েছে এবং এর নির্মাতারা কোন
যন্ত্র ছাড়াই কীভাবে এতো বিরাট পাথর গুলো উপরে রাখছে । ১৯৮৬ সালে স্টোনহেঞ্জ এবং
এবং এর আশপাশের কিছু অংশ ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এর অন্তর্ভুক্ত করা
হয়। তবে এখন স্টোনহেঞ্জ সার্কেল এর মধ্যে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা
হয়েছে।
৫. কলোসিয়াম
বিশ্বের সেরা ঐতিহাসিক স্থানের ৫ম স্থানে রয়েছে ইতালির কলোসিয়াম। বিশ্বের
"ল্যান্ড অব মার্বল" দেশ হিসেবে পরিচিত ইতালি। এবং কলোসিয়াম ইতালির রোমের খুব
নান্দনিক এবং ঐতিহাসিক একটি স্থান। খুব সম্ভবত যিশু খ্রিস্টের জন্মের আগে অর্থাৎ
অ্যান্নো ডমনি এর প্রথম শতাব্দীতে এই রনক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। এটা নির্মান
করেছিলেন সম্রাট ভেসপেসিয়ান এবং সম্রাট টাইটাস।
কলোসিয়ামের ইতালিয়ান নাম ফ্লাভারিন অ্যাঙ্কি থিয়েটার। রোমান এই রনক্ষেত্র এর
ধারণ ক্ষমতা ছিল ৪৫০০০ এবং এটাই পৃথিবীর সেরা রনক্ষেত্র বা রোমান। এখানে প্রাচীন
রোমের যোদ্ধাদের বিভিন্ন পণ্য এবং প্রণীর প্রদর্শনী হতো এখানে। এখানে মোল্লা
যোদ্ধাদের যুদ্ধ চলতো আমরণ পর্যন্ত। মধ্যে যুগ থেকেই এই রণক্ষেত্র টি শহীদের
করস্থান হিসেবেই সবাই জানে। আর কলোসিয়াম কে সবাই তখন থেকেই ভয়ংকর স্থান হিসেবে
সবাই চিনে। প্রাচীন রোমের এই ঐতিহাসিক রনক্ষেত্র টি কালের আবর্তনে খয় হয়ে গেছে
এবং অনেকংশেই দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তো বন্ধুরা পোষ্ট টি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন এবং পরবর্তীতে
কোন বিষয়ে পোস্ট করবো তাও কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকলে
কমেন্ট করুন।
Tags:
Facts